রাসূল সা. এর জীবনি (পর্ব - ০৩) আসহাবে ফীলের ঘটনাস্থল

পবিত্র কুরআনে উল্লেখকৃত এ ধরনের ঘটনা থেকে আমাদের উপদেশ গ্রহণ করা জরুরী যে, আল্লাহ তা‘আলার হুকুম-আহকামের অবমাননা করা নিজেদের ধ্বংস ও বরবাদি ডেকে আনারই নামান্তর। তাই সব ধরনের পাপাচার ও ঔদ্ধত্য পরিত্যাগ করে আল্লাহ তা‘আলা ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পন্থা অবলম্বন করা আমাদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। এর মাধ্যমেই আমরা খোদায়ী আযাব-গযব হতে রক্ষা পেয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হতে পারবো।

আসহাবে ফীলের ঘটনাস্থল


আসহাবে ফীলের এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল মিনা ও মুজদালিফার মাঝখানে মুহাসসার নামক স্থানে। মুসলিম ও আবু দাউদ শরীফের বর্ণনায় রয়েছে, ইমাম জাফর সাদেক রহ. তার পিতা ইমাম মুহাম্মাদ বাকের রহ. হতে বর্ণনা করেন, তিনি হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. হতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিদায় হজ্জের যে বিবরণ উদ্ধৃত করেছেন, তাতে তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মুযদালিফা হতে মিনার দিকে চললেন, তখন মুহাসসার উপত্যকায় চলার গতি খুব বাড়িয়ে দিলেন। বিশিষ্ট হাদীসবিশারদ ইমাম নববী রহ. এ হাদীসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, হস্তিওয়ালাদের উপর আযাব নাযিলের ঘটনা ঠিক এই জায়গায় সংঘটিত হয়েছিল। এ জন্য গযবের এই স্থানটিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব দ্রুত অতিক্রম করেছিলেন। সুতরাং এই স্থান এভাবে দ্রুত অতিক্রম করে যাওয়াই সুন্নত।

আল্লাহ তা‘আলা হাবশীদের এই শাস্তি দেওয়ার সাথে সাথে তিন-চার বছরের মধ্যে ইয়ামান হতে তাদের শাসন ক্ষমতারও অবসান ঘটান। হস্তিবাহিনীর এ ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে ইয়ামানের হাবশীদের শক্তি ও ক্ষমতা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায়। দিকে দিকে ইয়ামানী সরদাররা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে থাকে। এক পর্যায়ে ইয়ামানী নেতৃবর্গ হাবশীদের মোকাবেলায় পারস্য-সম্রাটের নিকট সামরিক সাহায্যের আবেদন করে। ফলে ৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের মাত্র এক হাজার সৈন্য ছয়টি যুদ্ধ জাহাজ সহ ইয়ামানে আগমন করে এবং সেখান থেকে হাবশীদের পরাস্ত করে তাদের শাসনের পরিসমাপ্তি ঘটায়।

হস্তিবাহিনীর এই অভূতপূর্ব ঘটনা সমগ্র আরবের এবং সারাবিশ্বের মানুষের অন্তরে কুরাইশদের মাহত্ম্য আরো বাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে সবাই এক বাক্যে স্বীকার করতে লাগলো, কুরাইশরা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ ভক্ত। তাই তাদের পক্ষ থেকে আল্লাহ তা‘আলা তাদের শত্রুদের নাস্তানাবুদ করে দিয়েছেন। (আল জামি‘ লি আহকামিল কুরআন লিল-কুরতবী)

আসহাবে ফীলের ঘটনা থেকে শিক্ষা

পবিত্র কুরআনে উল্লেখকৃত এ ধরনের ঘটনা থেকে আমাদের উপদেশ গ্রহণ করা জরুরী যে, আল্লাহ তা‘আলার হুকুম-আহকামের অবমাননা করা নিজেদের ধ্বংস ও বরবাদি ডেকে আনারই নামান্তর। তাই সব ধরনের পাপাচার ও ঔদ্ধত্য পরিত্যাগ করে আল্লাহ তা‘আলা ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পন্থা অবলম্বন করা আমাদের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। এর মাধ্যমেই আমরা খোদায়ী আযাব-গযব হতে রক্ষা পেয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হতে পারবো।

About the Author

ছোট বেলা থেকেই টেকনোলজির নিজের ভিতর অন্যরকম একটা টান অনুভব করি। যদিও কওমি মাদরাসার চার দেয়ালের ভিতরেই ছিল বসবাস। তারপরও অধম্য আগ্রহের কারনে যতটুকু শিখেছি ততটুকু ছড়িয়ে দিতে চাই সকলের মাঝে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.
Sharif Multimedia হোয়াটসঅ্যাপ এ আপনাকে স্বাগতম
আসসালামু আলাইকুম!
আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারি?
Type here...