ইসলামী শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত হলো, নবজাতকের জন্মের পর তার ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেওয়া। এটি নবজাতক ছেলে বা মেয়ে যেই হোক না কেন, উভয়ের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য। বিভিন্ন হাদিস থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
পড়তে ভালো লাগছে না? শুনে নিন...
![]() |
নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত: ইসলামের বিধান |
হাদিসের আলোকে:
১. হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হজরত হাসান ইবন আলি (রাঃ) জন্মের দিন তার ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেন। (বায়হাকি)
২. হজরত উবাইদুল্লাহ ইবনু আবু রাফে (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হাসান ইবন আলি (রাঃ) এর কানে নামাজের আজানের মতো আজান দেন। (তিরমিজি, আবু দাউদ, মুসনাদে আহামদ, বায়হাকি)
৩. হজরত হুসাইন (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, সে যেন তার ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেয়।" (বায়হাকি, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)
আজান ও ইকামতের গুরুত্ব:
নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো, জন্মের সাথেই নবজাতকের কানে আল্লাহর পবিত্র নাম, তাওহিদ এবং রেসালাতের ঘোষণা পৌঁছানো। এর মাধ্যমে নবজাতকের হৃদয় ও মস্তিষ্কে ঈমানের বীজ রোপিত হয় এবং তাকে শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা করা হয়। হাদিসের আলোকে জানা যায়, আজান ও ইকামত দেওয়া নবজাতকের জন্য কল্যাণকর এবং শয়তান ও খারাপ জ্বিনের প্রভাব থেকে রক্ষাকারী।
নারীদের আজান দেওয়া:
ছেলে বা মেয়ে উভয়ের জন্যই আজান ও ইকামত দেওয়া সমানভাবে সুন্নাত। যদি কোন পুরুষ উপস্থিত না থাকে, তবে মা (অথবা অন্য কোন নারী) যিনি নেফাস থেকে মুক্ত, তিনিও নবজাতকের কানে আজান দিতে পারেন। যদি আজান ও ইকামতের শব্দগুলো মুখস্থ না থাকে, তবে দেখে দেখে বললেও আজান ও ইকামত দেওয়ার হুকুম আদায় হয়ে যাবে।
স্মরণ রাখা উচিত:
নবজাতক ছেলে বা মেয়ে যেই হোক না কেন, ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেওয়াই ইসলামের বিধান। যদি কোন পুরুষ না থাকে, তবে নেফাস থেকে মুক্ত নারীরাও এই সুন্নাত পালন করতে পারেন। এভাবে আল্লাহ তাআলা নবজাতককে রোগ-ব্যাধি, জাদু-টোনা, বদ-জ্বিন ও শয়তানের আক্রমণ থেকে হেফাজত করবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এই সুন্নাত পালন করার তাওফিক দান করুন এবং যাবতীয় অকল্যাণ থেকে আমাদেরকে হেফাজত করুন। আমিন।