আপনার টাকার সঠিক ব্যবহার করুন দেখুন কিভাবে!

সীরাতে ঈসা আ: (পর্ব: - ০৫) ইহুদীদের ধর্ম বিকৃতি

নবুওয়্যাত লাভের পর হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালাম সত্যের বাণী নিয়ে বনী ইসরাইলকে আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি দাওয়াত দিতে লাগলেন। সুধীজনদের ইলমী মজলিস, সন্ন্যাসীদের কৃচ্ছ্র-সাধনালয়, বাদশা ও তার মন্ত্রীদের দরবার এবং সাধারণ ও বিশেষ ব্যক্তিদের মাহফিল, এমনটি হাট-বাজারে সর্বত্র তিনি দীনে হকের পয়গাম শুনাতে লাগলেন।
ইহুদীদের ধর্ম বিকৃতি

দায়েরাতুল মাআরিফে ইহুদীদের সম্বন্ধে যে নিবন্ধ রয়েছে, তার  পর্যালোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয় যে, হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালামের আগমনের পূর্বে ইহুদীরা ইবাদত ও আকীদার ক্ষেত্রে মুশরিকদের রুসুম-রেওয়াজ ও আকীদা-বিশ্বাসকে ধর্মের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছিল। মিথ্যা, ধোঁকা ও হিংসা-বিদ্বেষের মতো নিন্দনীয় চরিত্রগুলো আপন করে নিয়েছিলো এবং লজ্জার মাথা খেয়ে এসব নিয়ে তারা গর্ব করতো।
অপরদিকে তাদের বিজ্ঞজন ও সাধু-সন্ন্যাসীরা দুনিয়ার তুচ্ছ স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাওরাত শরীফে বিকৃতি সাধন করে। অর্থের লোভে তারা তাওরাতের আয়াতসমূহ বিক্রি করে ফেলে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, 

مِنَ الَّذِيْنَ هَادُوْا يُحَرِّفُوْنَ الْكَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِه

ইহুদীদের মধ্যে কিছুলোক এমন আছে, যারা (তাওরাতের) শব্দাবলিকে সেগুলোর প্রকৃত স্থান থেকে সরিয়ে দেয়।  (সূরা নিসা, আয়াত:৪৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেন, 

فَوَيْلٌ لِّلَّذِيْنَ يَكْتُبُوْنَ الْكِتَابَ بِاَيْدِيْهِمْ ثُمَّ يَقُوْلُوْنَ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ لِيَشْتَرُوْا بِه ثَمَناً قَلِيْلًا فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ اَيْدِيْهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا يَكْسِبُوْنَ

সুতরাং ধ্বংস সে সকল লোকের জন্য, যারা নিজ হাতে কিতাব লেখে তারপর (মানুষকে) বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে, যাতে এর মাধ্যমে তারা সামান্য কিছু আয়-রোজগার করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা রচনা করেছে, সে কারণে তাদের জন্য ধ্বংস এবং তারা যা উপার্জন করেছে, সে কারণে তাদের জন্য ধ্বংস।  (সূরা বাকারা, আয়াত:৭৯)

ইহুদীদের ঈমানী ও আমলী যিন্দেগীর চিত্র খোদ বাইবেলে হযরত শু‘আইব ‘আলাইহিস সালামের যবানে এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘খোদাওয়ান্দ বলেন, এরা (ইহুদীরা) যবানে তো আমার সম্মানের কথা বলে, কিন্তু তাদের অন্তর আমার থেকে বহুদূরে। এরা শুধু শুধু আমার উপাসনা করে। কেননা, আমার বিধান পিছনে ফেলে দিয়ে অন্যদের হুকুমের তামিল করে।’

ইয়াহুদীরা সে সময়ে বনী ইসরাঈলের নবীগণকে হত্যার ধারাবাহিকতায় হযরত ইয়াহইয়া ‘আলাইহিস সালামকেও নির্মমভাবে শহীদ করার মতো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটায়।

এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়েই হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালাম নবুওয়্যাত লাভ করেন। তখন তার বয়স ছিল তিরিশ বছর।

নবুওয়্যাত লাভের পর হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালাম সত্যের বাণী নিয়ে বনী ইসরাইলকে আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি দাওয়াত দিতে লাগলেন। সুধীজনদের ইলমী মজলিস, সন্ন্যাসীদের কৃচ্ছ্র-সাধনালয়, বাদশা ও তার মন্ত্রীদের দরবার এবং সাধারণ ও বিশেষ ব্যক্তিদের মাহফিল, এমনটি হাট-বাজারে সর্বত্র তিনি দীনে হকের পয়গাম শুনাতে লাগলেন।

হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালামের সেই দীনী দাওয়াতের বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, 

وَ اِذْ قَالَ عِیْسَی ابْنُ مَرْیَمَ یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اِنِّیْ رَسُوْلُ اللهِ اِلَیْكُمْ مُّصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوْرٰىۃِ وَ مُبَشِّرًۢا بِرَسُوْلٍ یَّاْتِیْ مِنْۢ بَعْدِی اسْمُهٗۤ اَحْمَدُ ؕ 

(হে নবী, স্মরণ করুন,) যখন মারিয়াম তনয় ‘ঈসা বলেছিলেন, হে বনী ইসরাইল, আমি অবশ্যই তোমাদের নিকট প্রেরিত আল্লাহর রাসূল আর আমার পূর্ব থেকে তোমাদের নিকট যে তাওরাত রয়েছে তার প্রত্যায়নকারী এবং একজন রাসুলের আগমনের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম হবে ‘আহমাদ’। (সূরা সফ, আয়াত:৬) 

হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালামের নবুওয়্যাত লাভের কথা আল্লাহ তা‘আলা বিভিন্ন আয়াতে ভিন্ন ভিন্ন শব্দে উল্লেখ করেছেন। যেমন, পবিত্র কুরআনের এক স্থানে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, 

وَلَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَی الْکِتٰبَ وَقَفَّیْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ بِالرُّسُلِ ۫ وَاٰتَیْنَا عِیْسَی ابْنَ مَرْیَمَ الْبَیِّنٰتِ وَاَیَّدْنٰهُ بِرُوْحِ الْقُدُسِ ؕ 

নিশ্চয় আমি মুসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তার পরে পর্যায়ক্রমে রাসূলগণকে পাঠিয়েছি। আর মারিয়াম তনয় ‘ঈসাকে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দিয়েছি এবং রুহুল কুদসের মাধ্যমে তাকে শক্তিশালী করেছি।  (সূরা বাকারা, আয়াত:৮৭)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, 

ثُمَّ قَفَّيْنَا عَلٰى اٰثَارِهِمْ بِرُسُلِنَا وَقَفَّيْنَا بِعِيْسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَاٰتَيْنَاهُ الْاِنْجِيْلَ

অতঃপর আমি তাদেরই পদাঙ্ক অনুসারী করে পাঠালাম আমার রাসূলগণকে এবং তাদের পিছনে পাঠিয়েছি ‘ঈসা ইবনে মারিয়ামকে। আর তাকে দান করেছি ইনজিল। (সূরা হাদীদ, আয়াত:২৭)

আল্লাহ তা‘আলা অপর আয়াতে ইরশাদ করেন, 

وَاِذْ عَلَّمْتُكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَالتَّوْرَاةَ وَالْاِنْجِيْلَ

স্মরণ করুন, যখন আমি আপনাকে (হযরত ‘ঈসা আ.-কে) কিতাব ও হেকমত এবং তাওরাত ও ইঞ্জিলের শিক্ষা প্রদান করেছিলাম। (সূরা মায়িদা, আয়াত:১১০)

ইহুদীদের ধর্ম বিকৃতি


দায়েরাতুল মাআরিফে ইহুদীদের সম্বন্ধে যে নিবন্ধ রয়েছে, তার  পর্যালোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয় যে, হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালামের আগমনের পূর্বে ইহুদীরা ইবাদত ও আকীদার ক্ষেত্রে মুশরিকদের রুসুম-রেওয়াজ ও আকীদা-বিশ্বাসকে ধর্মের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছিল। মিথ্যা, ধোঁকা ও হিংসা-বিদ্বেষের মতো নিন্দনীয় চরিত্রগুলো আপন করে নিয়েছিলো এবং লজ্জার মাথা খেয়ে এসব নিয়ে তারা গর্ব করতো।

অপরদিকে তাদের বিজ্ঞজন ও সাধু-সন্ন্যাসীরা দুনিয়ার তুচ্ছ স্বার্থসিদ্ধির জন্য তাওরাত শরীফে বিকৃতি সাধন করে। অর্থের লোভে তারা তাওরাতের আয়াতসমূহ বিক্রি করে ফেলে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, 

مِنَ الَّذِيْنَ هَادُوْا يُحَرِّفُوْنَ الْكَلِمَ عَنْ مَّوَاضِعِه

ইহুদীদের মধ্যে কিছুলোক এমন আছে, যারা (তাওরাতের) শব্দাবলিকে সেগুলোর প্রকৃত স্থান থেকে সরিয়ে দেয়।  (সূরা নিসা, আয়াত:৪৬)
আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেন, 

فَوَيْلٌ لِّلَّذِيْنَ يَكْتُبُوْنَ الْكِتَابَ بِاَيْدِيْهِمْ ثُمَّ يَقُوْلُوْنَ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ لِيَشْتَرُوْا بِه ثَمَناً قَلِيْلًا فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ اَيْدِيْهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا يَكْسِبُوْنَ

সুতরাং ধ্বংস সে সকল লোকের জন্য, যারা নিজ হাতে কিতাব লেখে তারপর (মানুষকে) বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে, যাতে এর মাধ্যমে তারা সামান্য কিছু আয়-রোজগার করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা রচনা করেছে, সে কারণে তাদের জন্য ধ্বংস এবং তারা যা উপার্জন করেছে, সে কারণে তাদের জন্য ধ্বংস।  (সূরা বাকারা, আয়াত:৭৯)

ইহুদীদের ঈমানী ও আমলী যিন্দেগীর চিত্র খোদ বাইবেলে হযরত শু‘আইব ‘আলাইহিস সালামের যবানে এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘খোদাওয়ান্দ বলেন, এরা (ইহুদীরা) যবানে তো আমার সম্মানের কথা বলে, কিন্তু তাদের অন্তর আমার থেকে বহুদূরে। এরা শুধু শুধু আমার উপাসনা করে। কেননা, আমার বিধান পিছনে ফেলে দিয়ে অন্যদের হুকুমের তামিল করে।’

ইয়াহুদীরা সে সময়ে বনী ইসরাঈলের নবীগণকে হত্যার ধারাবাহিকতায় হযরত ইয়াহইয়া ‘আলাইহিস সালামকেও নির্মমভাবে শহীদ করার মতো বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটায়।

এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়েই হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালাম নবুওয়্যাত লাভ করেন। তখন তার বয়স ছিল তিরিশ বছর।

নবুওয়্যাত লাভের পর হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালাম সত্যের বাণী নিয়ে বনী ইসরাইলকে আল্লাহর আনুগত্যের প্রতি দাওয়াত দিতে লাগলেন। সুধীজনদের ইলমী মজলিস, সন্ন্যাসীদের কৃচ্ছ্র-সাধনালয়, বাদশা ও তার মন্ত্রীদের দরবার এবং সাধারণ ও বিশেষ ব্যক্তিদের মাহফিল, এমনটি হাট-বাজারে সর্বত্র তিনি দীনে হকের পয়গাম শুনাতে লাগলেন।

হযরত ‘ঈসা ‘আলাইহিস সালামের সেই দীনী দাওয়াতের বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, 

وَ اِذْ قَالَ عِیْسَی ابْنُ مَرْیَمَ یٰبَنِیْۤ اِسْرَآءِیْلَ اِنِّ

Rate This Article

আমাদের সীরাতে ঈসা আ: (পর্ব: - ০৫) ইহুদীদের ধর্ম বিকৃতি বিষয়ক লেখাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের পোষ্টটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইল।

Getting Info...

About the Author

ছোট বেলা থেকেই টেকনোলজির নিজের ভিতর অন্যরকম একটা টান অনুভব করি। যদিও কওমি মাদরাসার চার দেয়ালের ভিতরেই ছিল বসবাস। তারপরও অধম্য আগ্রহের কারনে যতটুকু শিখেছি ততটুকু ছড়িয়ে দিতে চাই সকলের মাঝে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কুকি সম্মতি
আপনার ব্রাউজিং আরো সুন্দর রাখতে, ও আপনার করা বুকমার্ক মনে রাখতে আমাদেরকে কুকি সংরক্ষনে সম্মতি দিন।
উহু!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট কানেকশনে সমস্যা হয়েছে। দয়া করে ইন্টারনেট কানেকশন চেক করুন। অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।